Recents in Beach

লিটন হাউস অন দ্য প্রেয়ারি লরা ইঙ্গলস্ ওয়াইল্ডার


বিগ উডসে দিন দিন মানুষের বসতি বাড়ছে সেই সাথে শিকার পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে তাই গোটা শীত কাল লরার বাবা তার মাকে বোঝাতে সক্ষম হলো যে তারা এখন এখান থেকে পশ্চিমে গিয়ে ইন্ডিয়ানদের এলাকায় নতুন করে বসবাস করবে।
এরপর লরার মা রাজি হলে তাদের যাত্রা শুরু হলো।গল্প পড়তেছিলাম আর মনে হচ্ছিল আমিও লরার সাথে ঘু্রে বেড়াচ্ছি এই বিভিন্ন জায়গায়।কয়েকদিন তাদের এই যাত্রা চললো।পথে এক সময় খান পার হতে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল। তখন লরার মত আমিও ভয় পেয়ে গেছিলাম। আর ভাবতেছিলাম কি ভাবে তারা এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবে।কারণ ঢেউ অনেক বেশি ছিল।শেষে তারা খাল পার হলো ঠিকই কিন্তু হারিয়ে ফেললো তাদের আদরের কুকুর জ্যাককে।
জ্যাককে হারিয়ে লরা যে কষ্ট পেয়েছে তা যেন আমিও উপলব্ধি করতে পারছিলাম। কারন সে সময় তাদের কে বিপদ থেকে রক্ষা করতো।এবং কোন বিপদ আসার আগেই সাবধান করে দিতো।তাই তাকে ছাড়া এই জঙ্গলে টিকে থাকা একটু কষ্টই হবে।তারা প্রেয়ারি তে যখন বিশ্রাম নিচ্ছিল তখন রাতে জ্যাক ফিরে আসে। সে ওই খাল পার হয়ে আসতে পেরেছে দেখে লরা ও সকলে খুব খুশি হলো।এবং সবাই ওকে খুব আদর করলো।লরার সেই আনন্দের মুহুর্তটা আমিও খুব উপভোগ করেছি।
তারপর প্রেয়ারি এর জায়গাটা খুব পছন্দ হয়ে যায় লরার বাবার।তাই এখানেই বসতি তৈরির সিদ্ধান্ত নিলো।এবং ধীরে ধীরে কাঠ কেটে বাড়ির কাজও শুরু করলো।এর মধ্যে লরার বাবা এডওয়ার্ড নামের এক প্রতিবেশি কে খুঁজে পেল।সে তাদের বাড়ি বানাতে সাহায্য করলো এবং লরার বাবা তার বাড়ি বানাতে সাহায্য করলো।এভাবে ধীরে ধীরে তাদের বাড়ির কাজ শেষ হয়ে একটা সুন্দর ছোট বাড়িতে পরিনত হলো।ধীরে ধীরে লরার বাবা ফায়ারফক্স, চেয়ার, টেবিল, খাট আরও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বানালো।
এর মধ্যে লরার বাবা মিস্টার স্কট নামে আরও একজন প্রতিবেশি পেয়ে গেল।যে কিনা তাদের কুয়া বানাতে সাহায্য করলো।কিন্তু এর মধ্যে ইন্ডিয়ানদের যাওয়া আসা শুরু হলো ওই এলাকায়।একদিন ওদের বাড়িতেও এলো দুজন ইন্ডিয়ান। এসে কিছু খাবার খেয়ে গেল।লরার বাবা ওদের সাথে কোন প্রকার শত্রুতা করতে চান না তাই জ্যাক কেও বেঁধে রাখতেন।
এর মধ্যে একদিন শিকারে গিয়ে লরার বাবা প্রায় ৫০ টা নেকড়ে এক সাথে দেখলো।এবং ওদের মাঝ খান থেকে কোন রকম প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরলো।সেই রাতে ওই নেকড়ে গুলো লরাদের বাড়িতেও এলো।ওদের আওয়াজে লরা প্রচন্ড ভয় পেল।আমি তখন নিজেকে ওই অবস্থানে ভাবছিলাম।আমি তো ভয়ে কেঁদেকেটে একসারা হতাম নিশ্চিত।লরা তার বাবা কে সব চেয়ে ভরসা করে। তার বাবা কাছে থাকলে সে নিজেকে সব চেয়ে নিরাপদ মনে করে। আমার মনে হয় প্রত্যেকটা মেয়ের ক্ষেত্রেই এমন হয়।
এর মধ্যে ইন্ডিয়ানদের উপদ্রপ বাড়তেই থাকলো। একদিন তো নেতা মাপের এক ইন্ডিয়ান ওদের বাড়িতে এলো।লরার বাবা তাকে খাওয়ালেন। এবং তারপর সে চলে গেল।দিন দিন যেন সব কিছু হাতের নাগালে চলে যাচ্ছিলো। একদিন তো রাতে তাদের যুদ্ধ ধ্বনি শুনে সবায় ভয় পেল গেল। এভাবে কয়েকদিন সেটা চললো।লরাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো।প্রত্যেক মুহুর্তে অনিশ্চয়তা। এর মধ্যে ইন্ডিয়ানদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হলো এবং তারা অনেক তাদের নিজেদের মত চলে গেল।শুধু একটা জাতি সেখানে থাকলো।
খোঁজ নিয়ে লরার বাবা জানলো তারা তাদের মারতে চায় না। বরং অন্য উপজাতি গুলো মারতে চাইতো জন্যই ঝগড়া বেঁধে গিয়েছিল।এই খবর পেয়ে লরার বাবা খুব নিশ্চিত হলো।তাই সে বীজ নিয়ে এসে জমিতে চাষাবাদ শুরু করলো।এবং ফসল ভালোই ফলতে শুরু করলো।
এই ভাবে সুখে শান্তিতে তাদের জীবন যেতে পারতো শেখানে।কারণ অনেক শিকার ছিল সেখানে তার উপর ফসল ফলানো জন্য অনেক জমিও ছিল। তারা এখানে রাজার মত থাকতে পারতো।কিন্তু এমনটা হলো না।হঠাৎ একদিন বিপদ সংকেত পেল তারা।সকল সেটলারকে ইন্ডিয়ান টেরিটরি থেকে চলে যেতে বলেছে সরকার। আর না গেলে সোলজার এসে ধরে নিয়ে যাবে।তাই তাদের একবছরের মাথায় এত কষ্টে তৈরি করা বাড়ি ছেড়ে আবার অনিশ্চিতের উদ্দেশ্য যাত্রা করতে হয়।
এখন আমি খুব আগ্রহ নিয়ে আছি এর পর লরাদের জীবন আবার কোন বাঁক নিবে।এমন অনিশ্চিত জীবনের কথা ভেবেই কেমন ভয় হয় আমাদের। আমি বার বার নিজেকে এই অবস্থানের সাথে মিলচ্ছিলাম।আমরা তো একটু অনিশ্চয়তাই মেনে নিতে পারি। পুরো হতাশ হয়ে যায়। আর তারা প্রতি মুহুর্তে এমন ভাবেই জীবন অতিবাহিত করছে।আমি এই সিরিজ টা পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারছি। অনেক ভালো লাগছে পড়তে।জীবনে বিপদে ধৈর্য ধরতে হয় এবং উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে তা সমাধান করতে হয়।সেটা প্রতি মুহুর্তে বুঝতে পারছি এই বই টা পড়ে।
ধন্যবাদ



Post a Comment

0 Comments