Recents in Beach

দি হ্যাপি গোল্ডেন ইায়ার লরা ইঙ্গলস্ ওয়াইল্ডার

প্রথম শিক্ষকতা করতে গিয়ে লরা একটা মস্ত ধাক্কাই খেল।কারন মিসেস ব্রিউস্টার তাকে ভালো ভাবে নিতে পারলেন না। পরে জানতে পারলো লরা তিনি একজন মানসিক রোগি।গভীর রাতে ছুরি নিয়ে মারতে ওঠে স্বামীকে।লরা অনেক দুশ্চিন্তায় পরে গেল।কিন্তু তা আর বাবা মা কে বলে দুশ্চিন্তা দিতে চাইলো না।তাই ঠিক করলো কত কষ্টই হউক সে কোন রকম দুই মাস কাটিয়ে বেতন নিয়ে চলে যাবে।

সপ্তাহে দুই দিন ছুটি আছে। কিন্তু লরার বাবা প্রত্যেক সপ্তাহে এসে তাকে নিয়ে যেতে পারবে না এটা লরা জানে।তাই তাকে দুইমাস এভাবেই কাটাতে হবে।প্রথম সপ্তাহ কাটতেই লরার বুক টা হু হু করে উঠলো।কারন দুইদিন ছুটি কিন্তু তাকে এখানেই কাটাতে হবে।কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে লেডি আর প্রিন্স কে নিয়ে দেবদূতের মত দাঁড়িয়ে আছে আলমানযো। এভাবে দুই মাসের প্রত্যক ছুটির দিনেই লরাকে নিতে হাজার ঝড় বৃষ্টিও উপেক্ষা করে আলমানযো লরা কে আনতে যায়।এভাবে দুই মাস কেটে গেল এবং লরা বাড়িতে ফিরে এলো।
আবার লরা স্কুল যেতে শুরু করলো।এবং আবার সে সেলাই এর কাজ করেও কিছু টাকা পেল।এবং গীষ্মে মেরিকেও আনা হলো বাড়িতে।কিন্তু লরা অন্য কোথাও ছিল কিন্তু মেরি আসার পর সে চলে আসলো।এর মধ্যে প্রতি রবিবার করে লরা আলমানযোর সাথে বেড়াতে যেত। সব মিলিয়ে তার দিন গুলো ভালোই কাটলো।
লরা আবার শিক্ষকতা পেল এবং সে এবার ৭৫ টাকা পেল।এবং সেই টাকাও সে তার বাবা কে দিলো।এবং লরার বাবা সেই টাকা দিয়ে একটা অর্গান কিনতে চাইলো মেরির জন্য।লরার তাতে সম্মতি দিলো।কারন সেও খুশি হলে।অবশেষে অর্গান কেনা হলে।এর মধ্যে লরার পড়াশোনাও ভালো চলছিল এবং আলমানযোর সাথে সময় গুলোও খুব ভালো কাটলো।এছাড়াও মেরি কলেজে অনেক ভালো আছে সেটাও লরাকে অনেক শান্তি দেয়।সব মিলিয়ে লরার দিন গুলো ভালোই কাটলো।এরপর আলমানযো হঠাৎ করে লরা কে একদিন রিং পরিয়ে দিলো।সে যেভাবে তাকে রিং পরিয়ে দিয়েছিল সেটাও আমার খুব ভালো লেগেছিল।সব মিলিয়ে ভাবছিলাম যে দুজন কে কেমন লাগছে এক সাথে। আর তা কল্পনা করছিলাম।আর খুব ভালে লাগছিল লরার এমন আনন্দ দেখে।
এর মধ্যে আলমানযো একদিন তার ভাই সহ মিনেসোটায় চলে গেল বাবার কাছে কিছু দরকারি প্রয়োজনে।প্রথম প্রথম নিয়মিত চিঠি আসতো। কিন্তু ধীরে ধীরে চিঠি আসাও কমে গেল।আর পুরো শীতটা আলমানযো তর বাবার ওখানেই থাকবে।এর মধ্যে ক্রিসমাসের আগের রাতে খুব ঝড় শুরু হলো।আনমনে লরা ভাবতেছিল যে সে আলমানযোর থেকে রিং নিয়ে কোন ভুল করলো না তো।কারন আলমানযোর চিঠি আসা কমে গেছে। আলমানযো যদি আর কোনদিন ফিরে না আসে।এমনি সময় হঠাৎ করে দরজায় কড়া নাড়লো।এমন দরজা খুলে লরা অবাক হলো। এই ঝরের রাতে আলমানযো চলে এসেছে।এবং সে খুব খুশি হলো।এরপর সকলে বাইরে গেল এবং আলমানযো একটা সোনার ব্রুশ দিলো ক্রিসমাস উপলক্ষে।
খুব ভালো দিন যাচ্ছিলো লরার।এর পর খুব ছোট করে অনুষ্ঠান করে লরার আর আলমানযো বিয়ে হয়ে গেল।এবং লরা যখন নিজের সংসারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন তার পুরোন দিনের অনেক কথায় মনে পড়ে গেল। এবং শেষে সে আলমানযো এর সাথে চলে গেল নতুন জীবন শুরু করতে। বিদায় বেলা যেন লরার বাবাও অনেক কষ্ট পেল।তার আধ বোতল কে বিদায় দিতে অনেক কষ্ট পেল।লরার মারও একই অবস্থা।
প্রথম চার বছর মহানন্দে কাটলো।এরপর লরার বড় ছেলেটা মারা গেল এবং তারপর মেয়ে রোজ এলো কোলে।এর পর বছরের পর বছর অতিরিক্ত খরার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে গেল।আলমানযো অনেক দেনায় পরলো।৭ বছর এর মধ্যে দুটো ক্লেইমই হারালো আলমানযো। এদিকে ডিপথেরিয়া হয়ে আলমানযো খুড়িয়ে হাটে এখন।দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ছিল না ওদের। এর মধ্যে লরাদের বাড়িটাও আগুনে পুড়ে যায়।
এর পর ওদের শহরে এসে কায়িক পরিশ্রম করে যৎসামান্য উপার্জন করে দিন কাটাতে হলো বেশ কিছুদিন।এর পর কোন রকম ১০০ ডলার জমিয়ে মিসৌরীর পথে নিজের ভাগ্য পরীক্ষার জন্য।ওখানে ম্যান্সফিল্ড শহরের কাছে জমি কিনে নিজের হাতে মনের মতো একটা বাড়ি বানালো আলমানযো। ২০ একরের আপেল বাগান সহ চমৎকার একটা খামার বাড়ি গড়ে তুললেন। এরপর তাদের সমৃদ্ধি ফিরে আসলো এবং তাদের দীর্ঘ জীবন অনেক সুখে কাটলো।এর পর ১৯৪৯ সালে নিরানব্বই বছর বয়সে আলমানযো এবং ১৯৫৭ সালে ৯০ বছর বয়সে লরা মারা যান।ম্যান্সফিল্ডে লরারদের সেই বাড়িটি লেখক যখন এই বইটি লেখেন তখনও ছিল।হয়তো এখনও আছে তাদের সেই বেহালা,অর্গান আর লরার সেই পুরনো কাপড়ে তৈরি লরার সেই পুতুল শার্লোট।
দীর্ঘ সময় দিয়ে চেষ্টা করলো সাফল্য আসে এটা স্যার সব সময় বলেন। এই গল্প টা পড়ে বার বার সেই কথাটাই উপলব্ধি করলাম।হাজার প্রতিবন্ধকতার মধ্যে যদি হতাশ না হয়ে নিজের কাজ করা যায় তাহলে একদিন অবশ্যই সুদিন আসবে।স্যার এই জন্যই কিশোর ক্লাসিক গুলো এতো পড়তে বলেন।কারণ এগুলো পড়লে নিজের বাস্তব জীবনে অনেক উপকারে আসবে। এটা অসাধারণ একটা সিরিজ। পড়ে অসম্ভব ভালো লাগলো।লরা আর আলমানযো সুখের কথা গুলো পড়ে শেষে অনেক ভালো লেগেছে এবং বুঝতে পারলাম ধৈর্য ধরলে সুদিন আসবেই।
ধন্যবাদ



Post a Comment

0 Comments