চতুর্থ ও শেষ পর্ব
আলমানযোর বাবা মা এক সপ্তাহের জন্য বাড়ি ছেড়ে ছুটি কাটাতে যেতে চাইলেন আলমানযের আঙ্কেলের বাড়িতে।যাওয়ার আগে ছেলে মেয়েদের কাছে জানতে চাইলেন তারা সব কিছু সামলাতে পারবে কি না। সকলে বললো তারা পারবে।এর পর চার ভাইবোনের একটা সপ্তাহ ভালোই স্বাধীন ভাবে কাটালো।বাবা মা এর আসার আগের দিন ঠিকই তারা সব কাজ ঠিকঠাক মত করে ফললো। তাই বাবা তাদের প্রতি সন্তুষ্টই হলো।
এর পর শীতের সময় মেলা হয়। তারা সকলে মিলে দুই দিন সেই মেলা উপভোগ করলো।এবং সেই মেলায় বিভিন্ন প্রদর্শনী হয়।তার মধ্যে আলমানযো তার বিশাল কুমড়োর জন্য, অ্যালিস উলের কাজের জন্য এবং ইলাইযা জেন জেলির জন্য পুরস্কার পেল।এতে করে বাবা ও সকলে খুব খুশি হলো।আলমানযো সব সময় তার বাবার সাথে থাকতে সব চেয়ে বেশি পছন্দ করে।সব সময় তাই সে বাবার সাথে সাথেই থাকে।বাবাও যেন তাকে একটু বেশিই আদর করে। আর তাই তো এই ছোট বয়সে সে বুট পেল তখন মা রাগ করে বললো তুমি ওকে আদর দিয়ে বেশি মাথায় তুলছো।আর আলমানযো ভাবতেও পারি নি সে এত তারাতাড়ি বুট পাবে।তাই সেও মহাখুশি।
এর মধ্যে তার বাকি ভাই বোন অ্যাকাডেমিতে চলে গেল পড়াশুনার জন্য। সে বাড়িতে একা বাবা মার সাথে।কিন্তু সে সব কাজে বাবা কে সাহায্য করতে থাকলো।এবং সে সেই সাথে বিভিন্ন কাজও শিখতে শুরু করলো।এর মধ্যে ক্রিসমাস চলে এলো।আলমানযোর ভাইবোন অ্যাকাডেমি থেকে চলে এলো সকলে।ক্রিসমাসের সকালে তারা সকলে ক্রিসমাস গিফট পেল। সকলে গিফট পেয়ে মহা খুশি। কিন্তু আলমানযো মনে মনে ভাবলো তার গিফট সব চেয়ে সেরা।ক্রিসমাসে তার চাচা রাও এলো এবং সকলে মিলে খাওয়া দাওয়া ও আনন্দের মধ্যে ক্রিসমাস উৎযাপন করে চলে গেল।
এর পর আলমানযো যে বাবার মত একজন চাষি হতে চায় এটা তার কাজেই বোঝা যায়। সে প্রত্যেকটা কাজ অনেক নিখুঁত ভাবে শিখে নেয় যখন তার বাবা সেই সব কাজ করে।এবং সে খুব আনন্দ নিয়ে সেই সব কাজ করে। এর মধ্যে শীত কালে আবার স্কুলে যাওয়ার সময় হলো।কিন্তু প্রথমে সে যেতে চাইলো না।কিন্তু বাবা যখন বললো একজন দক্ষ চাষি হতে চাইলে ভালো অঙ্ক জানতে হয়।তখন সে স্কুলে যাওয়া শুরু করলো এবং অঙ্ক শেখা শুরু করলো।আর তাই তো তার বাবা যখন খড় নিয়ে শহরে যাবে ঠিক করলো।সে আগেই হিসাব করে বের করলো এই খড় বিক্রি করে বাবা কত টাকা পাবে।তখন বাবা খুব খুশি হলেন।এবং তাকে খড় বিক্রি করতে যাওয়ার জন্য তার সাথে যাওয়ার প্রস্তাব করলেন।আলমানযো এক কথায় যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল।
শহরে যাওয়ার পথে আলমানযো একটা মানিব্যাগ খুঁজে পেল।এবং বাবা কে দেখালো সেটা।তাতে ১৫০০ ডালার ছিল।আলমানযোর বাবা বুদ্ধি খাটিয়ে বের করলেন মানিব্যাগ টা কার।তারা শহরে গিয়ে তাকে সেটা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।এরপর খড় বিক্রি করার দাম কষাকষি দায়িত্ব আলমানযো কে দিলো তার বাবা।এবং আলমানযো তাতে নিরাস করলো না। উপযুক্ত মুল্যে খড় বিক্রি করে টাকা হিসাব করে বাবা কে দিলো।এতে বাবা অনেক খুশি হলেন।এর পর বাবা তাকে মিস্টার থম্পসন কে খুঁজে বের করে মানিব্যাগ টা ফেরত দিতে বললো।
অনেক খোঁজার পরে সে মিস্টার থম্পসন কে পেল মিস্টার প্যাডক এর ওয়াগ্যান শপের মধ্যে। সে তাকে দেখে তার মানিব্যাগ ফেরত দিলো। কিন্তু কৃপন থম্পসন কৃতজ্ঞতার বদলে আলমানযো কে অপমান করতে থাকলো।এবং শেষে মারতে পর্যন্ত এলো।তখন মিস্টার প্যাডক তাকে এসে আটকালে এবং তার থেকে দুইশ ডলার নিলো আলমানযোর জন্য।কিন্তু আলমানযো তা নিতে অস্বীকার করলো।তখন মিস্টার প্যাডল আলমানযোর বাবা এর কাছে গেলেন এবং সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। তখন আলমানযোর বাবা মিস্টার প্যাডল কে ধন্যবাদ দিলেন তার ছেলের সম্মান বাঁচানোর জন্য এবং আলমানযো কে টাকা টা নেওয়া অনুমতি দিলেন।এবং আলমানযো সেই টাকা ব্যাংকে রাখলেন।
এর মধ্যে মিস্টার প্যাডল আলমানযো কে নিজের শিক্ষানবিশ বানাতে চাইলেন। এবং এও বললেন যে তার ছেলে নাই তার অবর্তমানে সেই তার সব কিছুর মালিক হবেন।কিন্তু আলমানযোর বাবা কিছু বললেন না।বললেন যে আলমানযো যা চায় সে তাই হবে। কিন্তু তিনি কখনও চান না আলমানযো শহরে যাক আর তাই তার এই প্রস্তাবে মন খারাপ হয়ে যায়।তাই সে পুরো রাস্তা ও বাড়িতে এসেও চুপচাপ থাকতে শুরু করলো।তখন আলমানযোর মা কারন জানতে চাইলো।তখন সব শুনে সেও রেগে গেল।কারণ তিনিও চান না আলমানযো শহরে যাক। তিনিও চান আলমানযো বাবার মতই চাষি হোক।কিন্তু আলমানযোর বাবা নিজের সিদ্ধান্ত কখনও আলমানযোর উপর চাপাতে চাইলেন না।আর তাই শহরে যাওয়ার ভালো দিক ও খারাপ দিক সবই আলমানযো কে বললো।যদিও এসবের কোন দরকার ছিল না। কারন আলমানযো বাবার মত এই স্বাধীন পেশায় যেতে চায় এবং বাবার মতই পরিশ্রম করতে চায়।বাবা যখন আলমানযোর কাছ থেকে উত্তর জানতে চায়।আলমানযো তখন একটা কোল্ট কেনার আবদার করে।তখন আলমানযোর বাবা মুচকি হাসি দেন।এবং আলমানযো কে তার সব চেয়ে পছন্দের স্টারলাইটকে দিয়ে দেন।প্রথম আলমানযো তা বিশ্বাসই করতে পারছিন না।আলমানযো খুবই খুশি হয়েছিল।
এই গল্পটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। একটা নয় বছরের বাচ্চা কি হতে চায় সে সম্পর্কে তার পূর্ণ ধারণা আছে। এছাড়াও তার কাজের প্রতি ডেডিকেশন ও ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।বাবার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস এবং বাবার আদর্শে নিজেকে তৈরি করা।টাকা পয়সার মূল্য কতটা তা বুঝতে পারা।এরপর লাভ কম নিয়ে বিক্রি বেশি করা।এরকম আরও অনেক কিছুতেই আমি মুগ্ধ হয়েছি। এবং গল্প টা পড়ে অনেক অনুপ্রেরণা পেলাম। আর এটা শিখলাম যে আমরা যাই করি না কেন সেই কাজকে সর্বোচ্চ ভালোবাসতে হবে।
0 Comments